জৈব মেমরি (DNA)
DNA একটি পলিমার যার এক একটা ইউনিটকে বলা হয় নিউক্লিওটাইড। চার ধরণের নিউওক্লিউটাইড বিভিন্নভাবে সজ্জিত হয়ে DNA গঠন করে। আমাদের বংশানুক্রমিক সকল তথ্য নির্ভর করে এই চার ধরণের নিউক্লিওটাইডের ক্রম অনুসারে। মানুষের প্রতিটি কোষে সর্বমোট ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে, এর এই একেকটি ক্রোমোজোমেই থাকে মানুষের মনোদৈহিক বৈশিষ্ঠ নির্ধারনি সকল তথ্য।
একে তুলনা করা যেতে পারে একটি বইয়ের সাথে। মজার ব্যাপার হলো এককোষী-বহুকোষী সকল জীবের বৈশিষ্ঠ নির্ধারনী সকল বইয়ের ভাষা একই, সবগুলোই লেখা ঐ চারটি বর্ণেই।
এক একটি ক্রোমোজোম কি পরিমান তথ্য ধারণ করতে পারে তা নির্ভর করে ক্রোমোজোম যে DNA দ্বারা গঠিত তার দৈর্ঘ্যের উপর। এক একটি DNA এর দৈর্ঘ্য কি পরিমান হবে তা নির্ভর করে এতে কি পরিমান নিউক্লিওটাইড আছে তার উপর।
বাইনারীতে তথ্য ধারণ ক্ষমতা পরিমাপের একক হলো bit, একেকটি bit কে ‘0’ এবং ‘1’ এই দুইটি সংখ্যার সাহায্যে প্রকাশ করা হয়। একইভাবে যদি বংশগতির সকল তথ্য দুইটি অক্ষরে লেখা হতো তাহলে DNA মলিকুলের bit এর পরিমাপ হতো নিউক্লিউটাইড জোর এর দ্বিগুন।
একইভাবে যেহেতু চারটি অক্ষর দ্বারা DNA গঠিত তাই bit এর পরিমান হবে DNA নিউক্লিওটাইড জোর এর চারগুন। মানব জিনোম এর দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৩ বিলিয়ন নিউক্লিওটাইড জোর, তাই এর bit এর সংখ্যা হচ্ছে ১২ বিলিয়ন (১২,০০০,০০০,০০০)। এখন দেখা যাক এই ১২ বিলিয়ন bit বলতে আসলে কি পরিমান তথ্যকে বোঝায়। যদি DNA এর তথ্যকে একটি সাধারণ বই আকারে প্রকাশ করা হয় তাহলে সেই বইটি কত বড় হবে? আমাদের ব্যবহৃত ভাষার যে কোনো অক্ষরকে প্রকাশ করতে ৬ bit এর প্রয়োজন। সুতরাং ১২ বিলিয়ন bit এর সাহায্যে ২ বিলিয়ন অক্ষর প্রকাশ সম্ভব।
যদি একটি শব্দের গড় দৈর্ঘ্য ৬ অক্ষর হয় তাহলে আমদের প্রয়োজন ৩৩৩ মিলিয়ন শব্দের। যদি এক পৃষ্ঠার ৩০০ শব্দ হয় তাহলে আমাদের DNA এর এর সমস্ত তথ্য লিখতে প্রয়োজন প্রায় ১ মিলিয়ন পৃষ্ঠা। বড় আকারের একটি বইয়ে যদি ৫০০ পৃষ্ঠা থাকে তাহলে আমাদের প্রয়োজন প্রায় ২০০০ বইয়ের।
No comments